BCS ই‌‌ কি জীবনের সব || জীবনে BCS কে এত গুরুত্ব না দিয়ে, উৎপাদনশীলতায় অংশগ্রহণ করতে হবে



Created: 8 months ago | Updated: 2 months ago | Created By:
Md. Monirul Islam
Md. Monirul Islam
27 Apr 2024 147 (0.06 Minuntes Need Read)

BCS ই‌‌ কি জীবনের সব??? এই জীবনে BCS ছাড়াও অনেক অনেক কর্মক্ষেত্র আছে। বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে এই BCS নামক মরীচিকার পিছে ছুটে, নিজের জীবনের মূল্যবান প্রোডাক্টিভ লাইফ টা কে ধ্বংস করে।


আমার মতে ১ বার ই খুব ভালো করে প্রিপারেশন নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া উচিত, যদি না হয়, তাহলে অন্য কাজে মন দেওয়া উচিত। শুধু পরীক্ষার কয়েক দিন আগে, প্রিপারেশন নিয়ে পরের বার গুলোতে পরীক্ষা দিতে যাবে।


তাহলেই এত কম্পিটিশন, এত ভোগান্তি, এত এত কোচিং বাণিজ্য সবই বন্ধ হবে।


BCS ছাড়াও জীবনে অনেক অনেক সম্মানজনক পেশা আছে, নিজের ভিতরের প্রতিভা দেখানোর, উদ্ভাবন শক্তি কে কাজে লাগানোর জায়গা আছে, যা বাংলাদেশ কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।


এই বাংলাদেশ এ কোনো গবেষক তৈরি হয় না, কোনো ভালো বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক তৈরি হয় না, কোনো ভালো শিল্পী তৈরি হয় না এই BCS নামক জীবন জুয়ার কারণে।


অনেক মেধা নষ্ট করে দেয়। যাদের হয় তাদের লাইফ সেট, কয় এক জন ই সেই সৌভাগ্যবান হয়। আর যাদের হয় না তারা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। তাদের সংখ্যা অনেক অনেক বেশি।


এই সমাজে শুধু BCS ছাড়া অন্য কিছু কে মূল্যায়ন করা হয় না বলেই আজ এই অবস্থা। আমরা নিজেরাই এই মরণ জুয়া প্রতিযোগিতায় পাগলের মতো অংশগ্রহণ করে সমাজের এমন একটা অবস্থান এর সৃষ্টি করেছি। আমরা স্টুডেন্ট রাই দায়ী।


জীবনে BCS কে এত গুরুত্ব না দিয়ে, উৎপাদনশীলতায় অংশগ্রহণ করতে হবে, আগে ইনকাম এর ব্যবস্থা করতে হবে বেশি করে, নিজেকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বাঁচাতে, নিজের পরিবার কে বাঁচাতে, এই দেশ কে এগিয়ে নেওয়ার জন্য।


বাংলাদেশে যে কোনো শিক্ষার্থীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতীক্ষিত একটি পরীক্ষা হলো বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষা। অনেকের কাছে এটি জীবনের একমাত্র লক্ষ্য এবং সফলতার মাপকাঠি। তবে, এই বিসিএস নামক মরীচিকার পেছনে ছুটতে গিয়ে দেশের অসংখ্য প্রতিভাবান শিক্ষার্থী তাদের মূল্যবান প্রোডাক্টিভ জীবনের বড় একটি অংশ নষ্ট করছেন। এই প্রবন্ধে আমরা বিসিএস পরীক্ষার বিকল্প কর্মক্ষেত্র, এর প্রয়োজনীয়তা, এবং কীভাবে উৎপাদনশীল জীবনের দিকে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব সে বিষয়ে আলোচনা করবো।

বিসিএস: কেন এত আকর্ষণ?

বিসিএস পরীক্ষার পেছনে এত মানুষের দৌড়ের প্রধান কারণ এটি চাকরির নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা, এবং স্থায়ী চাকরির সুযোগ দেয়। সফল হলে সমাজে সম্মান এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, এবং পরিবারের সদস্যদেরও গর্বের অনুভূতি আসে।

বিসিএস-এর বিকল্প কর্মক্ষেত্র: সম্ভাবনা এবং প্রয়োজনীয়তা

যদিও বিসিএস চাকরি অনেকের কাছে জীবনের লক্ষ্য, এর বাইরেও আরও অনেক সম্ভাবনাময় কর্মক্ষেত্র আছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক তরুণ উদ্যোক্তা, প্রযুক্তিবিদ, গবেষক, এবং শিল্পী তাদের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং, আইটি সেক্টর, বিজনেস, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।

১. গবেষণা এবং উদ্ভাবনী শক্তি

বাংলাদেশে গবেষণা এবং উদ্ভাবনী ক্ষেত্র তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানী, গবেষক, এবং উদ্ভাবকদের জন্য প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে স্টার্টআপ এবং উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলির গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং সমর্থন বৃদ্ধি পেলে অনেক তরুণই বিসিএস ছাড়াও তাদের ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারবে।

২. ফ্রিল্যান্সিং এবং আইটি সেক্টর

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ফ্রিল্যান্সিং এবং আইটি সেক্টর বাংলাদেশের জন্য বিশাল সম্ভাবনার একটি ক্ষেত্র। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডেটা সাইন্স, গ্রাফিক ডিজাইন এবং আরো অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের জন্য কাজ করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন।

৩. উদ্যোক্তা এবং ব্যবসা

নিজের ব্যবসা শুরু করা, অর্থাৎ উদ্যোক্তা হয়ে উঠা এখনকার তরুণদের জন্য অন্যতম এক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। অনেকেই ছোট ব্যবসা, ই-কমার্স বা অন্যান্য সেবা-ভিত্তিক ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার তৈরি করছেন।

৪. শিক্ষা এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কাজ

শিক্ষা, স্বেচ্ছাসেবা, এবং এনজিও ক্ষেত্রেও অনেক তরুণ কাজ করছেন। দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার মাধ্যমে একদিকে তারা সামাজিক অবদান রাখছেন, অন্যদিকে নিজেদের কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলছেন।

বিসিএস-এর আসক্তি: কীভাবে কমানো যায়

বাংলাদেশের তরুণ সমাজের মধ্যে বিসিএস-কে এত বেশি প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে যে, এতে অনেক শিক্ষার্থী অন্য কোনো বিকল্প চিন্তাই করেন না। বিসিএস প্রস্তুতির জন্য বছরের পর বছর সময় ব্যয় করেন, যা অনেক ক্ষেত্রে মেধার অপচয় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

বিসিএস নয়, উদ্ভাবনী কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা

বর্তমান সময়ে সমাজে শুধু বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মানুষের মূল্যায়ন বেশি করা হয়। তবে দেশের উন্নতির জন্য আরও গবেষক, বিজ্ঞানী, শিল্পী, প্রকৌশলী দরকার। বিসিএস ছাড়া অন্যান্য কর্মক্ষেত্রেও যে সম্মান এবং সফলতা অর্জন করা সম্ভব, সেটি আমাদের সমাজকে বোঝাতে হবে।

উপসংহার

বিসিএস একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ পরীক্ষা হলেও, এটি জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। নিজের মেধা, সৃজনশীলতা, এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অন্য অনেক সম্মানজনক কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়া সম্ভব।